AdGuru

Saturday, January 18, 2014

আপনার ব্রাউজার যে ১০টি কাজ করতে সক্ষম

আজ থেকে মাত্র ১০ বছর আগেও ব্রাউজার হিসেবে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৬ এর আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মত । গত কয়েক বছরে ইন্টারনেট ব্রাউজারগুলোর উন্নতির ফলে আজ সেই স্থান দখল করে নিয়েছে ফায়ারফক্স, গুগল ক্রোম ও অপেরা এর মতো আধুনিক সব ব্রাউজার। শুধু তাই নয়, প্রতিনিয়ত এসব ব্রাউজারেযোগ কর হচ্ছে নিত্য-নতুন সব ফিচার। আর এই সব আধুনিক ব্রাউজারগুলোর কল্যাণে ওয়েবসাইটগুলোও নতুন নতুন সব সুবিধা উন্মুক্ত করছে যা আগে সম্ভব ছিল না।
যাই হোক, আজ প্রিয় পাঠকদেরকে এমন কিছু নতুন ওয়েব টেকনোলজির সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো যা কিনা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। নিঃসন্দেহে অনেকেই আছেন যারা এর কিছু কিছুর সাথে পরিচিত কিন্তু অধিকাংশ মানুষই এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে জানেন না। তাদের জন্যই আজকের এই লেখা।
টেকনোলজিগুলোর বিশদ বিবরণ প্রিয় টেক পাঠকদের জন্য বিস্তারিত তুলে ধরা হলঃ-

ড্র্যাগ অ্যান্ড ড্রপ আপলোড

 

aa
অনেক ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই এখন ড্র্যাগ অ্যান্ড ড্রপ আপলোড সুবিধা উপভোগ করা সম্ভব হচ্ছে। এর মাধ্যমে আপনি আপনার ফাইলটিকে কাঙ্ক্ষিত সাইটে আপলোড করার জন্য ড্র্যাগ করে এনে ছেড়ে দিলেই তা আপলোড হয়ে যাবে। যেখানে কয়েক বছর আগেও ওয়েবপেজে কোন ফাইল আপলোড দিতে হলে প্রথমে ব্রাউজ বাটন ক্লিক করে ফাইল বাছাই করে আপলোড করতে হতো, সেখানে আজ তা খুবই সহজ হয়ে উঠেছে। কোন ফাইল অথবা ফটোকে এখন ইমেইল এর জন্যই হোক অথবা শেয়ারিং এর জন্যই হোক, শুধু ড্র্যাগ করে এনে কাঙ্ক্ষিত স্থানে ছেড়ে দিলেই হল, ফাইলটি ওয়েবসাইট এ অটোমেটিক আপলোড হয়ে যাবে।
তবে বলা বাহুল্য, এক্ষেত্রে যে সাইটে ফাইল বা ফটো আপলোড করা হচ্ছে সে সাইটে ড্র্যাগ অ্যান্ড ড্রপ আপলোড সুবিধা চালু থাকতে হবে।

ব্রাউজারেই 3D গ্রাফিক্সঃ

 

aa

বর্তমান সময়ে গুগল ক্রোম, ফায়ারফক্স এর মতো ব্রাউজারগুলোর WebGL সাপোর্ট করার কারণে ওয়েবপেজগুলো কোন বাড়তি প্লাগ-ইন ছাড়াই 3D গ্রাফিক্স সুবিধা প্রদান করতে সক্ষম হচ্ছে। মূলত গেমস ও 3D মডেলিং-এর জন্যই WebGL ব্যবহার করা হয়ে থাকে। WebGL ব্যবহার করছে এমন সব ওয়েবসাইটের মধ্যে সবচাইতে জনপ্রিয় হলো গুগল ম্যাপস । গুগল ক্রোম এর মাধ্যমে গুগল ম্যাপস ব্যবহার করার সময় “MapsGL” অপশনটি এনাবল করে দিলে আপনি, “OpenGL” এর মাধ্যমে গুগল ম্যাপস এ 3D অ্যানিমেশনের সুবিধাগুলো উপোভোগ করতে পারবেন কোন বাধা ছাড়াই । এছাড়াও স্ট্রিট ভিউ ব্যবহার করার সময় ম্যাপসটি জুম করার সাথে সাথে অ্যানিমেশন এর মাধ্যমে পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ভিউ। উল্লেখ্য যে, এখানে অ্যাডোবি ফ্ল্যাশের কোনো ভূমিকাই নেই।
শুধু গুগল ম্যাপসই নয়, WebGL ব্যাবহৃত আরেকটি চমৎকার ওয়েবসাইট হচ্ছে Quake 3 WebGL demo। এখানে quake 3 ইঞ্জিনটি আপনার ব্রাউজার এর WebGL এর সাথে কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে যেখানে এটি আপনাকে মাউস পয়েন্টার লকের মাধ্যমে গেম এরিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবে।

ওয়েবসকেটস এর মাধ্যমে যোগাযোগঃ

 



aa

HTML (Hyper Text Markup Language) তৈরি করা হয়েছিল স্ট্যাটিক ওয়েব পেজের জন্য। কখনোই ওয়েবপেজ এবং সার্ভারের মধ্যে যোগাযোগের জন্য নয়। বেশিরভাগ ওয়েবসাইটই সার্ভারের সাথে যোগাযোগের জন্য “হকি_পলিং-বেজ” (hacky polling-base) মেথড ব্যবহার করে, যেখানে ওয়েবসকেটস ওয়েবপেজগুলোর টিসিপি (TCP) কানেকশন এর উপর একটা পুরোদস্তুর যোগাযোগ চ্যানেল প্রতিষ্ঠা করে। এর ফলে যখন ওয়েবসাইট এবং সার্ভারের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান ঘটে তখন নাটকীয়ভাবে সময় এবং নেটওয়ার্ক ট্রাফিক কমে যায়।
মজিলা ফায়ারফক্স এর “ব্রাউজার কুয়েস্ট গেম” (যা ব্রাউজারেই রান হয়) ওয়েবসকেটস এর মাধ্যমে সার্ভার এবং ওয়েবপেজ এর মধ্যে পুনঃপুন তথ্য আদান-প্রদান করার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে । শুধু তাই নয়,, ব্রাউজার এর মধ্যে IRC ক্লায়েন্ট তৈরি করার জন্যেও ওয়েবসকেটস ব্যবহৃত হচ্ছে ।

ফ্ল্যাশ ছাড়াই দেখুন ভিডিও এবং মিউজিকঃ

 

aa


HTML5-এর জনপ্রিয়তা ক্রমশই বৃদ্ধির ফলে অনেকেই এখন জানেন যে, H.264(MP4), WebM and Ogg Theora ফরম্যাটের ভিডিওগুলো ফ্ল্যাশ ছাড়াই চালানো সম্ভব। ইউটিউবসহ অনেক ভিডিও ওয়েবসাইট এইচটিএমএল৫ এর মাধ্যমে ভিডিও প্লেব্যাক সুবিধা প্রদান করছে। দুর্ভাগ্যবশত কিছু কিছু ওয়েবসাইটের জন্য এখনো ডিআরএম (DRM) এর প্রয়োজন হয়, যার কারণে ভিডিওর সাথে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য ইউটিউব এখনো ফ্ল্যাশ ব্যবহার করছে। এছাড়াও নেটফ্লিক্সও একই কারণে সিলভারলাইট ব্যবহার করছে। এইচটিএমএল৫-এর ভিডিও ট্যাগ অনেকটা দেখতে ফ্ল্যাশ-বেইজড ভিডিও প্লেয়ারের মতো, সে কারণেই হয়তো বোঝা একটু কষ্ট সাধ্য যে, কোন ওয়েবসাইট এটা ব্যবহার করছে ।

অফলাইনেই চালান ওয়েবঅ্যাপসঃ

 

aa
এখনকার ব্রাউজার এর মাধ্যমে আপনি পাচ্ছেন অফলাইন এ ওয়েব অ্যাপস চালানোর সুবিধা। যেখানে অ্যাপগুলো আপনার লোকাল স্টোরেজ ব্যবহার করে ডাটা জমা রাখবে পরবর্তীতে ব্যবহার করার জন্য। গুগল ক্রোমের অনেক অ্যাপসই (Gmail, Docs and Calendar)-এখন অফলাইনে ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে ফায়ারফক্স-এর অফলাইন অ্যাপ হিসাবে কিন্ডল ফায়ার ব্যবহার করা যাচ্ছে। কিন্ডল ক্লাউড রিডার-এর মাধ্যমে আপনি ই-বুক ডাউনলোড করে এবং পরবর্তীতে ব্রাউজার এর মাধ্যমে অফলাইনেই পড়তে পারবেন, এমনকি যদি আপনার ইন্টারনেট কানেকশন তখন নাও থাকে।

aa

ভিডিও কনফারেন্সের জন্য ওয়েবক্যাম অ্যাকসেসঃ

বর্তমানে ওয়েবপেজগুলোও এখন আপনার ওয়েবক্যাম ব্যবহার করতে সক্ষম কিন্তু সেটা অবশ্যই আপনার অনুমতি সাপেক্ষে। সাধারণত আপনার প্রোফাইল পিকচার এর জন্য এখন ফটো তুলতে এবং ভিডিও রেকর্ড করার জন্য ওয়েবপেজগুলো এই ফিচারটি ব্যবহার করে থাকে। নতুন WebRTC API-এর মাধ্যমে প্লাগ-ইন ছাড়াও এটি অন্যান্য ব্রাউজারে মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। আর খুব বেশিদিন নেই যখন গুগল হ্যাংআউটস-এর জন্য কোনো প্লাগ-ইন-ই দরকার পড়বে না এবং স্কাইপও আপনার ব্রাউজারেই চালানো যাবে ।

নোটিফিকেশন পপ-আপঃ

aa
ব্রাউজার এর মাধ্যমে এখন ওয়েবপেজ এর ডেক্সটপ নোটিফিকেশনও পাওয়া সম্ভব । উদাহরণস্বরূপ, গুগল কালেন্ডারে কোন রিমাইন্ডার ক্রিয়েট করলে পপ-আপ উইন্ডো এর মাধ্যমে এখন আপকামিং ইভেন্টের নোটিফিকেশন দেখা সম্ভব। চ্যাট এবং ই-মেইল ওয়েবসাইটগুলোও পপ-আপ উইন্ডোর মাধ্যমে আপনাকে মনে করিয়ে দিবে কখন কোথায় কী হচ্ছে ।

জেনে নিন আপনার নিজের অবস্থানঃ

 

aa

কিছু কিছু ওয়েবপেজ ব্রাউজারের মাধ্যমে আপনার লোকেশন জানার জন্য এখন আপনার নুমতি নিয়ে আপনার অবস্থান জানাতেও সক্ষম। আপনি যদি ট্যাবলেট অথবা GPS চিপ সম্বলিত কোনো ডিভাইস ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার ব্রাউজার আপনার লোকেশন জানার জন্য GPS হার্ডওয়ারটি অটোমেটিক অ্যাক্সেস করবে। অন্যদিকে আপনি যদি এমন কোন ডিভাইস ব্যবহার করেন যেটায় GPS চিপ নেই, তাহলে আপনার ব্রাউজার আপনার IP অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে আপনার সবচেয়ে কাছাকাছি ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক অথবা আপনার ISP এর লোকেশন দেখাবে।

ডিফল্ট অ্যাপ্লিকেশন এ পরিণত করুন আপনার ওয়েব অ্যাপঃ

আধুনিক ব্রাউজারগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েব অ্যাপসগুলোকে আপনার ডিফল্ট অ্যাপস-এ পরিণত করে নিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ আপনি জিমেইলকে আপনার ডিফল্ট ই-মেইল অ্যাপে পরিণত করতে পারেন যাতে করে যখনই আপনি mailto: লিংক এ ক্লিক করবেন তখনই এটা আপনার ব্রাউজার ওপেন করবে। হতে পারে সেটা ব্রাউজার থেকে অথবা আপনার কম্পিউটারের যেকোনো সফটওয়্যার বা উইন্ডো থেকে থেকে ।
গুগল ক্রোমে এটা করতে চাইলে প্রথমেই এমন একটা ওয়েবসাইট সিলেক্ট করুন যেটাকে আপনি আপনার ডিফল্ট অ্যাপ হিসেবে ব্যবহার করতে চান, যেমন ই-মেইল এর জন্য জিমেইল, ক্যালেন্ডার টাস্কের জন্য গুগল ক্যালেন্ডার ইত্যাদি। সেখানে যাওয়ার পর আপনার ব্রাউজারের লোকেশনবারের উপর একটা আইকন ফুটে উঠবে যেখানে ক্লিক করলে এই ওয়েব অ্যাপটিকে আপনার ডিফল্ট অ্যাপ বানানোর জন্য অপশন দেখা যাবে ।

aa

এছাড়াও আপনি গুগল ক্রোম এর হ্যান্ডলার ফিচারের মাধ্যমে নিজে থেকেই ম্যানেজ করে নিতে পারেন আপনার সব অ্যাপ্লিকেশন। এ জন্য আপনাকে প্রথমে ক্রোম এর সেটিং থেকে শো অ্যাডভান্স সেটিংস লিংকটিতে ক্লিক করতে হবে। এরপর প্রাইভেসি > কন্টেন্ট সেটিংস > হ্যান্ডলারস এবং সবশেষে ম্যানেজ হ্যান্ডলারস থেকে আপনি আপনার ইচ্ছেমতো অপশন বাছাই করতে পারবেন।

aa

ফায়ারফক্স ব্যবহারকারীরাও-এর অপশন উইন্ডো থেকে বিভিন্ন লিংকের জন্য অ্যাপলিকেশন কন্ট্রোল করতে পারবেন। এর জন্য যেটা করতে হবে তা হলো, প্রথমেই আপনাকে অপশন মেনু থেকে অ্যাপ্লিকেশন-এ যেতে হবে। এপর কোন কাজের জন্য কোন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে হবে তা সিলেক্ট করে দিতে হবে । যেমন ই-মেইল এর জন্য জিমেইল অথবা ইয়াহু মেইল, IRC এর জন্য Mibbit, ক্যালেন্ডারের জন্য Google Calender অথবা 3D Boxes এবং আরও অনেক।

aa

নেটিভ কোড রান করুন আপনার ব্রাউজারেইঃ

 

aa

সম্প্রতি গুগল ক্রোমে যুক্ত হল নেটিভ কোড রান করার সুবিধা Google’s Native Client। নেটিভ ক্লায়েন্ট এর মাধ্যমে আপনার ব্রাউজার থেকেই সরাসরি রান করতে পারবেন সি/সি++ এ লেখা কোড । কোডগুলো এক্সিকিউট হবে স্যান্ডবক্সের ভেতর এবং রান হবে প্রায় নেটিভ স্পিডেই । নেটিভ ক্লায়েন্ট, গেম ইঞ্জিন এবং লোকাল ভিডিও এনকোডিং-এর জন্য লেখা হাই-পারফরম্যান্স কোডগুলো ওয়েবপেজেই রান করাতে সক্ষম। এটিই হতে পারে ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আরও অ্যাডভান্স অ্যাপ্লিকেশন পাওয়ার একটি মাধ্যম। বহু প্রশংসিত ওয়েব গেম Bastion সহ ক্রোম ওয়েব স্টোরে রয়েছে নেটিভ ক্লায়েন্টস-এ লেখা অসংখ্য অ্যাপ।
চমকপ্রদ আরও সব তথ্য জানতে চোখ রাখুন প্রিয় টেক-এর পাতায় । লেখা সম্পর্কিত যেকোনও ধরনের মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।

0 comments:

Post a Comment